উল্লাপাড়ায় বাঁশের ঝুড়ি বানিয়ে জীবনের চাকা বদল

সিরাজুল ইসলাম রায়হান, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি,
সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া উপজেলায় করোনা ভাইরাস আতংকেও থেমে নেই বাঁশের তৈরি ঝুড়ির কাজ, এখানে স্বাভাবিব ভাবে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। কিশোর-কিশোরী, বৃদ্ধ, যুবক-যুবতী, গ্রামের সকল মানুষ ঝুড়ি তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছে। উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নে দমদমা, রাঘববাড়িয়া দুটি গ্রামে ঝুড়ি বানিয়ে প্রায় তিন হাজার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। এবছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দাম নিয়ে চিন্তিত পরিবারগুলো। এছাড়াও সঠিক সময়ে কাজ শেষ না করতে পারলে লোকসান গুনতে হবে এমনটাই ধারনা করছেন এই পেশায় কর্মরত কারিগররা। অন্যান্য বছরে বিশেষ করে রমজান মাসে ঈদুল ফিতর ঈদুল আযহার সময় ভালো দাম পাওয়া যায়। এছাড়া সারা বছর আম লিচু পাঁকার সময়ে ঝুড়ি তৈরি কারিগরদের মুখে হাসি ফোটে। কয়েকমাস ঝুড়ি তৈরি করে স্টক করে রেখে এই সময়ে সেগুলো বিক্রির ধুম পরে যায়। এবছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সময় মতো মহাজনদের ঝুড়ি ডেলিভারী দিতে না পারলে শিল্পের সাথে জড়িত সবাইকে লোকসানের মুখে পরতে হবে। দমদমা গ্রামের আরিফুল ইসলাম জানান, আমার সংসারে পরিবারের সবাই মিলে বাজার থেকে বাঁশ ক্রয় করে ঝুড়ি তৈরির কাজ করে সংসার চালাই। জমিজমা না থাকায় এই পেশা জীবিকা নির্বাহ হিসাবে নিয়েছি। বর্তমানে ভিবিন্ন কোম্পানিতে প্লাস্টিকের ক্যারেট তৈরি হওয়ার কারণে এখন আগের মতো মূল্য পাওয়া যায় না। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের ঝুড়ি তৈরি কারিগরদের দিকে নজর দিলে হয়তো একাজের সঠিক মূল্যায়নটা আমরা পাবো। এবং সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে ঋন দিলে ঝুড়ি তৈরি করে সংসার চালানো সহজ হবে। একই গ্রামের আলুফা খাতুন জানান, কলেজ শেষ করে অনেক কষ্ট করে ঝুড়ি তৈরির কাজে আমার পরিবারকে সহায়তা করি। নিজের প্ররিশ্রমেই সরকারী আকবর আলী কলেজ থেকে বিএসএস পাশ করে কোন চাকরী না পেয়ে এই পেশা করি। শফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে তিন কোয়ালিটির ঝুড়ি তৈরি হয় এগুলো হলো হাজারী, দেড় হাজারি, দুই হাজারি, বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে এর চাহিদা বেশি। বর্তমানে চারজন প্ররিশ্রমে একদিনে একশো ঝুড়ি তৈরি করা যায়। ঝুড়ি তৈরি কারিগরদের তিন বেলা খাবার দিয়ে সারে তিন টাকা মজুরী দিতে হয়। একশো ঝুড়ি তৈরি করতে সব মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যায় এবং বাজারে বিক্রি করতে হয় পঁচিশ টাকায়। পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ জানান, আমার ইউনিয়নে দমদমা রাঘববাড়িয়া গ্রামে বাঁশ দিয়ে ঝুড়ি তৈরি করে সংসার চালায় অনেক পরিবার। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে তাদের মাঝে সচেতনতা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে পুরো ইউনিয়নে ৭০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে বাঁশ দিয়ে ঝুড়ি তৈরি করা কারিগরদের ত্রাণ সহায়তার আওতা ভুক্ত করা হবে


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ