পুলিশকে সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে বলেছেন লিটন কুমার সাহা এসপি

মোঃ শরিফ,নাটোর
 দায়িত্ব পালনে জনবান্ধব এবং জনসাধারণের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। দেশের জনগনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্যে প্রয়োজন ভাল মানের পুলিশ প্রশাসন। যাদের কল্যাণে আমাদের নিরপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। সেজন্য প্রয়োজন আমাদের দেশে সৎ, নিষ্ঠাবান, দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্য। তবে বর্তমানে এ বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যদের কাজের মাধ্যমে দিন দিন মানুষ বাহিনীটির উপর আস্তা ফিরে পাচ্ছে। তেমনি এক কর্মকর্তা নাটোর জেলা পুলিশ সুপার যিনি তার দায়িত্ব পালন করে নাটোর বাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে।
নাটোর জেলার দায়িত্বভার গ্রহনের ছয় মাসের মধ্যে বার বার তিনি প্রশংসিত হয়েছেন কাজের মাধ্যমে । নাটোর জেলার থানা গুলোর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে একটা ভাল অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পিছনে তার অবদানের কথা নাটোরের সাধারণ মানুষের জানা। তার কাজে জনসাধারন যেমন খুশি তেমনি তার অধিনস্থরাও সন্তুষ্ট। একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে ইতোমধ্যে তিনি স্থান করেছেন নাটোরের সাধারণ মানুষের মনে।
জানা গেছে, জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকে তার চৌকস অফিসারদের নিয়ে রাত দিন পরিশ্রম করেন। নাটোর জেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে অন্ধকারের পথ থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। তাদেরকে বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। এছাড়াও জঙ্গি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, জাল টাকা ব্যবসায়ী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চোর, ডাকাত গ্রেপ্তারে বিশেষ অবদান রেখেছেন। যার ফলে স্থানীয় থানা ও পুলিশ বিভাগের প্রতি জনগনের স্বস্তি আসা ও আস্থা এবং বিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিপূর্বে অন্য কেউ এমন বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি নাটোরে। এছাড়াও তার কঠোর হস্তক্ষেপের কারণে করোনা ভাইরাসে আতংকের সুযোগে ব্যবসায়ী এবং মজুদদাররা আতংকিত । অন্যান্য অপরাধ। বর্তমান জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা যোগদান করার পর থেকেই নাটোর যেন এক নিরাপত্তার চাদরে বসবাস করছে জনগন।
অন্যদিকে নাটোরের আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক উন্নয়নে জেলা পুলিশ সুপারের এর গৃহিত কর্মসূচীর বাস্তবায়ন ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বর্তমান পুলিশ সুপার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই জঙ্গী, সন্ত্রাসী, ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী গ্রেফতার, অস্ত্র উদ্ধার সহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রচুর সুনাম অর্জন করেছেন। তার প্রত্যক্ষ দিক-নির্দেশনায় নাটোরের ৭টি থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি)। জটিল ও কঠিন মামলার জট খুলে রহস্য উম্মোচন করে দীর্ঘ মেয়াদী মামলাকে করেছে সংক্ষিপ্ত। ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা, হেরোইন,অস্ত্র সহ মাদক উদ্ধার ও ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। একের পর এক সাঁড়াশি অভিযানে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে মাদকের অস্তানা।
ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯সালের জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধের জন্য ইতোমধ্যে ৬৮১ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন ধারায় মোট ৩৭২টি মামলা দায়ের সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া মাদক, আন্তঃজেলা ডাকাত, ছিনতাইকারী, প্রতারক চক্রসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে জেলা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও সার্বক্ষণিক তৎপর ছিল।এছাড়াও মাদক বিরোধী এবং জঙ্গিবাদ বিরোধী গণসচেতনতা তৈরী করেও সফল হয়েছে ডিবি পুলিশ। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে প্রায় প্রতিদিনই উদ্ধার হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য এবং আটক হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী, পাচারকারী এবং মাদকসেবী যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
ডিবি পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের তুলনায় বহুলাংশে এগিয়ে নাটোর ডিবি পুলিশ। গত ১ বছর তাদের প্রশংসনীয় কার্যক্রম সাফল্যমন্ডিত করে তুলেছে । নাটোরে ১০ নারীকে হত্যাকারী সিরিয়াল কিলার আনোয়ার ওরফে আনার বাবু ওরফে কালুকে গ্রেফতার, অপহরণের চারদিনের মধ্যে অপহৃত কিশোর উদ্ধার, মাদক বহন ও চোরাই মোটরসাইকেল ৩২টি, ৪০ কেজি গাঁজা, ১৪০০ গ্রাম হেরোইন, ৭৪৭ বোতল ফেন্সিডিল, ১৭হাজার ৬৫৯ পিস ইয়াবা, ৫০টি মোবাইলসহ নগদ ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭২৫ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে তারা।আইনের আওতায় আনা হয়েছে বহু শীর্ষস্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামী, আন্তঃজেলা ডাকাত দল, ছিনতাইচক্রের সদস্য সহ বিভিন্ন অপরাধী চক্র কে।
তিনি যোগদানের পরে গত ২ জানুয়ারী নাটোরের বনবেলঘড়িয়া বাইপাসে গ্রামীণ ট্রাভেলের্স এর যাত্রীর পায়ের স্যান্ডেল থেকে ৮০ হাজার ইউএসএ ডলার সহ দুইজনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।নাটোরের গুরুদাসপুর থানার ১৬টি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও চলমান ২১টি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি সাবেন আলীকে (৫০) ঢাকার মিরপুরের বড়বাগ থেকে গ্রেফতার ।নাটোরের সিংড়ায় চাঞ্চল্যকর শিশু জুয়েল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।নাটোরের বড়াইগ্রাম থেকে অটোবাইক চালক রুহুল আমীনকে কুপিয়ে অটোবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় গুরুদাসপুর থেকে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে ।নাটোরের বাউল শিল্পী সুভাস রোজারিও কে উদ্ধার ।নলডাঙ্গায় চার কাপড়ের দোকানে ডাকাতির সাথে জড়িত মহিলাসহ আন্তজেলা ডাকাতদলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ডাকাতির ১৪ দিন পর ডাকাত দলের এই তিন সদস্যকে গত ৫ ফেব্রুয়ারী বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ থেকে গেপ্তার করা হয়।তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির লুণ্ঠিত প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামালসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মিনি ট্রাক ঢাকার একটি শপিং কমপ্লেক্স থেকে উদ্ধার করা হয়।নাটোরের গুরুদাসপুরে চাঞ্চল্যকর মুক্তিযোদ্ধা স্ত্রী মনোয়ারা বেগম হত্যা মামলার আসামীকে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে-গ্রেফতার সক্ষম হয়।নাটোরের রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির ছাত্র শেষ বর্ষের ছাত্র কামরুল ইসলামকে (২৩) কুপিয়ে হত্যা আসামীদের গ্রেফতার সহ চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।
এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পুলিশের পাশাপাশি ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর নাটোরে হত্যাকান্ডের সংখ্যা কম ছিল।পাশাপাশি প্রতিটি অপরাধকে গুরুত্ব দেওয়ায় কমেছে অন্যান্য অপরাধসমূহও। অধিকাংশ হত্যারহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ