রোদেলা হত্যার ৩ বছরেও শুরু হয়নি বিচার

ডেস্ক রিপোর্টঃ
বিয়ের দেড় মাস না যেতেই স্বামীর বাড়িতে নির্যাতনে নিহত কলেজছাত্রী সাজিয়া আফরিন রোদেলা (১৮) হত্যাকাণ্ডের তিন বছরেও গ্রেফতার হননি স্বামী সোহানুর রহমান সোহন (৩১)। ফলে এখনও শুরু হয়নি বিচার কার্যক্রম। 

২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি খুন হন ফরিদপুর শহরের আলিপুর খাঁ-বাড়ি মহল্লার শওকত হোসেন খান শকার একমাত্র মেয়ে রোদেলা। রোদেলা সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। 

২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি গোয়ালচামট নতুন বাজার মহল্লার মমিনুর রহমান সেন্টুর ছেলে প্রবাসী সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে বিয়ে হয় রোদেলার। বিয়ের পর থেকে রোদেলাকে উঠতে-বসতে নানা কারণে মানসিক নির্যাতন করা হতো বলে তার পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়। একপর্যায়ে যৌতুকের জন্য তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান স্বামী। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য রোদেলাকে চাপ দিতে থাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এজন্য তাকে নানাভাবে মানসিক যন্ত্রণা দিত। একপর্যায়ে রাতের বেলা স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে রোদেলাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় মামলা করা হয়। ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বর্তমানে এ মামলা বিচারাধীন। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই গাফফার বলেন, রোদেলার মরদেহের ভিসেরা রিপোর্টে শ্বাসরোধে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। ব্যাপক তদন্ত শেষে স্বামী সোহানসহ আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন রোদেলার ননদ সুমি বেগম (৪০), শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম (৫৫), ভাসুর মো. সুমন (৩৬), ভাসুরের স্ত্রী রেখা বেগম (২৫), শ্বশুর মোমিনুর রহমান সেন্টু (৬৫), ননদের স্বামী মো. হাফিজ (৪৫) ও সোহানের মামাতো ভাই সাজিদ (৪২)। এ মামলায় ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ফরিদপুরের সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) স্বপন কুমার পাল বলেন, প্রধান আসামি রোদেলার স্বামী ঘটনার পর হতে পলাতক রয়েছেন। তাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। এরপর মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। 

রোদেলার বাবা শওকত হোসেন খান বলেন, রোদেলাকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টাও করা হয়। গত তিন বছর মেয়ের হত্যার বিচারের আশায় আদালতের বারান্দায় ঘুরছি। এখনও রোদেলার স্বামী গ্রেফতার হয়নি। মামলাটিকে দীর্ঘায়িত করতে নানাভাবে অপচেষ্টা করছে প্রভাবশালী আসামিরা। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। একই সঙ্গে মামলার প্রধান আসামি সোহানকে গ্রেফতারের জন্য জোর দাবি জানাই। 

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই বেলাল হোসেন বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি সোহানুর রহমান সোহানকে গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ