ডেস্ক নিউজঃ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ব্যানারে ভাষা শহীদদের পরিবর্তে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র ছবি ব্যবহারের পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও (রাবি) এমন ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয়, রাবি'র শিক্ষার্থীদের ব্যানারেও ছিল ভুলে ভরা।
২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাতফেরি নিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ ব্যবহার করেছে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি সম্বলিত ব্যানার। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এখানে কাউকে ছোট করা কিংবা অসম্মান জানানোর উদ্দেশে এমনটা করা হয়নি।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে বিভাগের পক্ষ থেকে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে র্যালি ও পুষ্পস্তবক অর্পণ কর্মসূচি হাতে নেয় বিভাগটি। এজন্য ব্যানার তৈরি করা হয়। শোকরাঙা সেই ব্যানারের মাঝখানে লেখা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।’ এর একপাশে শহীদ মিনার এবং অন্যপাশে সাতটি ছবি। তবে সেগুলো ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক কিংবা জব্বারের নয়। ছবিগুলো মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীরশ্রেষ্ঠ বাঙালিদের। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশমাতৃকার টানে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
এদিকে ব্যানারটির ছবি শনিবার বিকেলে (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নামের একটি ফেসবুক পেজে ভাইরাল হয়।
রেজওয়ান হোসাইন নামের আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করা হয়। সেখানে রেজওয়ান হোসাইন লিখেন, ‘৫২ ও ৭১ কিংবা রফিক, সালাম, বরকতদের সঙ্গে বীরশ্রেষ্ঠদের পার্থক্য, এতটুকু মনে রাখার জন্য কি আসলেই ইতিহাস নিয়ে পিএইচডি করতে হয়? অথচ আপনারাই নিজেদেরকে দেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক ভাবেন এবং নিজেদের নামের সঙ্গে প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যাগ লাগিয়ে চলেন। এখানেই শেষ নয়, আবার আপনারাই অন্যদের ব্যানারের ভুল দেখে হাসাহাসি করেন, ট্রল করে মজা নেন। বলি কী, আগে নিজেদেরকে তো শোধরান! একের পর এক যা চলছে ক্যাম্পাসে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে শুধু ট্রল করা ছাড়া কেউ আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গর্ব করার সাহস পাবে না! খোদা হাফেজ।’ এ পোস্টে একের পর এক বিরূপ মন্তব্য পড়তে থাকে এবং অনেকেই এর সমালোচনা করেন।
এ বিষয়ে রাবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম বলেন, সংগীত বিভাগের এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়।
বিষয়টি স্বীকার করে সংগীত বিভাগের সভাপতি দীনবন্ধু পাল বলেন, র্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতের ফেস্টুনে বীরশ্রেষ্ঠ এবং ভাষা শহীদ সবারই ছবি ছিল। কিন্তু যখন ছবি তোলা হয়েছে তখন হয়তো অংশগ্রহণকারীরা ফেস্টুন নামিয়ে নিয়েছিলেন। তাই হয়তো ভাষা শহীদদের ছবি আসেনি। ব্যানারে ভাষা শহীদদের ছবি না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভাষা শহীদ, বীরশ্রেষ্ঠ সবারই ছবি রেখেছিলাম। প্রেসের ভুলে হয়তো বা তাদের ছবি আসেনি।
এ বিষয়ে রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, এর মাধ্যমে বিভাগটি নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে। আশা করছি তারা আগামীতে এ ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করবে।
/জাগো নিউজ ২৪।
0 মন্তব্যসমূহ