ইউএনওকে মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানের কথায় না চলতে হাইকোর্টের নির্দেশ

ইউএনওকে মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানের কথা না শুনার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার কবি নজরুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির কাজে হস্তক্ষেপ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে অবমাননামূলক কথা না বলতেও সতর্ক করেন হাইকোর্ট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হোসেন ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে ভর্ৎসনাও করেন হাইকোর্ট। সঙ্গে সঙ্গে আদালতের আদেশকে গুরুত্ব না দেয়ায় তাদের কঠোরভাবে সতর্ক করেন।

নিউজ ডেস্কঃ
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার কবি নজরুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির কাজে হস্তক্ষেপ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে অবমাননামূলক কথা না বলতেও সতর্ক করেন হাইকোর্ট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হোসেন ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে ভর্ৎসনাও করেন হাইকোর্ট। সঙ্গে সঙ্গে আদালতের আদেশকে গুরুত্ব না দেয়ায় তাদের কঠোরভাবে সতর্ক করেন। 

এর আগে তারা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে আবেদন করেন। কিন্তু আদালত সেই ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন গ্রহণ না করে শুনানির জন্য ১০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী দিন ঠিক করেন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন সতর্ক করে আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক রাজু। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট শামীমা ইসলাম মৌ ও সিন্ধা সরকার। 

আদালত তাদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, ‘আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাই মন্ত্রী, এমপি-উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে পরিচালিত হবেন না। নিরপেক্ষভাবে প্রশাসন পরিচালনা করুন।’ 

আদালত তাদেরকে প্রশ্ন্ রেখে বলেন, ‘স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ার‌ম্যান বললেই সেটা করতে হবে? আপনারা কি প্রমোশনের জন্য এসব করেন?’ 

আদালত বলেন, ‘আপনারা বিসিএস কোয়ালিফাইড অফিসার। স্থানীয় রাজনীতিতে জড়াবেন না। সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করুন। প্রমোশন এমনি হয়ে যাবে।’ 

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে অবমাননামূলক কথা না বলতেও সতর্ক করেন হাইকোর্ট। 

অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, ২০১৬ সালে নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কবি নজরুল কলেজে মিস নারগিস আক্তারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় ম্যানেজিং কমিটি। নিয়োগের বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডকে জানানো হয়। পরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুনর রশিদ চিঠি ইস্যু করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হল, সে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। উপজেলার নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। 

আইনজীবী বলেন, “যদিও ২০১৬ সালে হাইকোর্ট কলেজ পরিদর্শক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ম্যানেজিং কমিটির কোন কাজে হস্তক্ষেপ না করে তাদেরকে সহযোগিতা করতে। তারা আদালতের এই আদেশ মানেনি। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে থাকা নিয়ে কলেজ পরিদর্শক চিঠি দেন। এছাড়া গত ২৩ জানুয়ারি এসএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত মিটিং এ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এমনকি মিস নারগিস আক্তারকে উদ্দেশ্যে করে মিটিং এ তিরষ্কার করে বলেন, ‘আপনি তো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় চলেন, হাইকোর্টের ক্ষমতায় চলেন।” 

আদালতের আদেশ না মানার বিষয়ে সম্পূরক আবেদন করা হয়। গতকাল উচ্চ আদালত তাদেরকে তলব করেন।
এরপর চিঠি এবং আদালতের আদেশ না মানার বিষয়ে হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন করা হয়। এরপর সেই সম্পূরক আবেদন শুনানি নিয়ে (২৭ জানুয়ারি) তাদের তলব করেন। সেই আলোকে মঙ্গলবার তারা উপস্থিত হয়েছিলেন।
/পূর্বপশ্চিমবিডি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ