কক্সবাজারে বেয়াইয়ের কটেজে ইয়াবা ও রোহিঙ্গা পতিতার হাট!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের কটেজগুলো ‘পাপের স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে। তার মধ্যে সাইনবোর্ড বিহীন 'বেয়াইয়ের কটেজ' নামীয় পরিচিত হোটেল এর আড়ালে চলছে মাদকবাণিজ্য। ‘ওপেন সিক্রেট’ চলছে ইয়াবা ও পতিতার হাট। সকাল-সন্ধ্যা কটেজ জোনের বিভিন্ন সড়কে বিচরণ অপরাধীদের। বিশেষ টোকেন এর মাধ্যমে কটেজে প্রবেশ করে এসব অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লাইট হাউজ এলাকার নেজাম নামের এক টোকাই এই 'বেয়াইয়ের কটেজ' এর নানা অপকর্মকাণ্ডের পেছনে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এই টোকাই নেজামের ভয়ে স্থানীয়রা এসব অপকর্মকাণ্ডের বিষয়ে মুখ খুলতে পারছে না বলে জানা যায়।

গোপন সূত্রে জানা যায়, বিশেষ করে রাত ১২টার পর চলে এসবের রমরমা ব্যবসা। যেন এই কটেজ একটি মিনি পতিতালয়। তাছাড়া পতিতা-খদ্দের খোঁজে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু-কিশোরদেরও। কমিশন ভিত্তিতে পতিতা ও মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে কিছু রিক্সা ও সিএনজি চালক। নিরাপদ এলাকা হিসাবে মাঝারী থেকে বড় মাপের ব্যক্তিরাও এই কটেজ গিয়ে তাদের আকাম-কুকাম সারছে প্রতিনিয়ত।

স্থানীয় সুত্রের দাবী, এক সময় দিনের বেলায় হলেও এখন দিন রাত ২৪ ঘন্টাই চলছে এই কটেজের অপকর্ম। হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন দামের পতিতা ও নেশাজাতদ্রব্য। এসব কাজে জড়িত রয়েছে স্থানীয় রাঘববোয়ালরা। প্রতিদিন অপরাধ করেও রহস্যজনক কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। 

সরেজমিন গিয়ে পর্যটক সেজে কথা হয় এই 'বেয়াইয়ের কটেজ' নামীয় হোটেলের কয়েকজন কর্মচারীর সাথে।
পর্যটক পরিচয় দেয়ায় এগিয়ে আসে এক কর্মচারী। দেখা মিলে দরজার ভেতরে পতিতা। বাইরে চেয়ার নিয়ে বসে আসে কর্মচারী। গেইটে যাওয়া মাত্রই বলেন-প্রতিটা রুমে রয়েছে পতিতা। আপনাদের যেটা পছন্দ সেটা নিতে পারবেন। এরআগে টোকেন নিয়ে ঢুকতে হবে কিন্তু। 

স্থানীয়রা জানান- এই কটেজ জোন এখন পতিতার কটেজ বললে চলে। পাপের ঘাটি হিসেবে এখন একটাই পরিচয় এই কটেজ। পতিতাদেরকে মাসিক এবং দৈনিক ভাড়ার মাধ্যমে রুমে স্টক রেখে গণহারে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। 

সুত্র জানায়, এই কটেজে প্রতিদিনই রোহিঙ্গা, স্কুল, কলেজ ছাত্রীদেরও এনে দেহ ব্যবসায় সম্পৃক্ত করা হয়। রেজিস্ট্রার খাতায় বোর্ডারের নাম-ঠিকানা লিখার নিয়ম থাকলেও তা মানেনা কেউ। বেপরোয়া ভাড়া বানিজ্য চলে এই কটেজে।

টোকাই নেজামের নেতৃত্বে গড়ে উঠে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট শুধুমাত্র পতিতা ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। মাদকদ্রব্য, চোরাচালান, ইয়াবা সেবন নানা অপকর্ম তারা নিয়ন্ত্রণ করে। পর্যটক ছিনতাইয়ের সাথেও এরা জড়িত। আর এই নেজাম সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত 'বেয়াইয়ের কটেজ' নামীয় হোটেলে অপরাধজন কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পরিচ্ছন্ন অনেক কটেজ ব্যবসায়ী।

স্থানীয় সাধারণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কটেজ জোনে মূলত দালাল নেজামের হাত ধরে অনেকেই পতিতা জগতে পা রেখেছে। সংসার ভাঙছে প্রবাসীদের। নষ্ট হচ্ছে উঠতি বয়সী যুবক-যুবতির জীবন। পতিাবৃত্তির কষাঘাতে অকালে ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী।

এ প্রসঙ্গে থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, কটেজজোনে অপরাধের বিষয়ে মাঝে মধ্যে কিছু অভিযোগ আসে। ইতিমধ্যে সেখানে অনেকবার অভিযান চালানো হয়েছে। ধরা পড়েছে অনেক পতিতা। সাজাও হয়েছে তাদের। শীঘ্রই অভিযুক্ত কটেজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ