২১ ডিসেম্বর নাটোর মুক্ত দিবস

মোঃ শরিফ,নাটোর
২১ ডিসেম্বর নাটোর মুক্ত দিবস। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকা হানাদার মুক্ত হলেও নাটোর মুক্ত হয় ২১ ডিসেম্বর। কারণ নাটোর ছিল হানাদার বাহিনীর ২নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টার। মুক্তিযুদ্ধে নাটোরে বড় ধরনের কোন লড়াই না হলেও একাধিক স্থানে চালানো হয় গনহত্যা। তবে ৩০ র্মাচ লালপুর উপজেলার দুর্গম ময়না গ্রামে পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিকামী জনতার যে যুদ্ধ হয় তা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম যুদ্ধ। পরে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাক হানাদার তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী, দত্তপাড়া, ফতেঙ্গাপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্্ির, শুকলপট্রি, মলি¬কহাটি, বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি, সিংড়ার হাতিয়ানদহ এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল চত্বরে গনহত্যা চালিয়ে শহীদদের একসাথে মাটি চাপা দেয়। স্বাধীনতার পর শহীদদের স্মরণে এসবস্থানে স্থানীয়ভাবে স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে তোলা হলেও স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও সরকারীভাবে এসব স্মৃতি স্তম্ভের কিংবা শহীদ পরিবারের মেলেনি স্বীকৃতি। মুক্তিযুদ্ধের সময় নাটোর ছিল পাকসেনাদের সামরিক হেড কোয়াটার। ফলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে পাকসেনারা ১৬ ডিসেম্বর থেকে নাটোরে এসে জড়ো হতে থাকে। নাটোর পিটিআই স্কুল, আনসার হল, রিক্রিয়েশন ক্লাব, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি (উত্তরা গণভবন) ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়। এসব পাকসেনারা মিত্র বাহিনীর কাছে নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পন করে ২১ ডিসেম্বর। পাক সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ মিত্র বাহিনীর ১৬৫ মাউনটেন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পন করেন। এদিন পাকিস্তানি বাহিনীর ১৫১ অফিসার,১৯৮ জন জেসিও, ৫৫০০ সেনা, ১৮৫৬ জন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য  এবং টি ট্যাংক, ২৫ টি কামান ১০ হাজার ৭৭৩ টি ছোট অস্ত্র  সহ আত্মসমপর্ন করে। মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মকে জানাতে দিবসটি পালনের প্রয়োজনীয়তা আছে মনে করলেও এর আগে দিবসটি পালনে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে এবার দিবসটি পালনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের উদ্যোগে আনন্দ শোভাযাত্রা, শহরের মাদ্রাসা মোড়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্প স্তবক অর্পণ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ