ভূঁয়া আমমোক্তার নামা দিয়ে দলিল সৃজন করে পিপলস লিজিং কোম্পানির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ


কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্তের দির্দেশ দুদকের!

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে পিপলস লিজিং কোম্পানির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অবশেষে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক খান মোঃ মিজানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কক্সবাজার জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়,তথ্য গোপন করে পূর্বে বিক্রি করে দেওয়া জমি পূনরায় ভূঁয়া আমমোক্তার নামা দিয়ে দলিল সৃজন করে পিপলস লিজিং কোম্পানি থেকে প্রায় ১৭ কোটি টাকা  (১৬,৬৮,০৫,৮৯৭) আত্মসাতের বিষয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। এ ঘটনার তদন্ত করতে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। 

স্মারক নং-০০, ০১, ২২০০, ৬২৩, ০১, ০৪৬, ২৪ /কক্সবাজার এ মোস্তাক আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কক্সবাজার এবং অন্যান্য এর বিরুদ্ধে ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে পিপলস লিজিং এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানী থেকে ১৬,৬৮,০৫,৮৯৭ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ আনা হয়। যার দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার নথি নং-০, ০১, ২২০০, ৬২৩.০১.০৪৬, ২৪ মহাপরিচালক (তদন্ত-২) অনুবিভাগের ই/আর নং- ২/০৬/২৪ /কক্সবাজার। 

এতে বলা হয়েছে উপরোক্ত বিষয় ও সূত্রের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বিষয়ে বর্ণিত অভিযোগটি অনুসন্ধান কার্যক্রম বিধি মোতবেক সম্পন্ন করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন নিমিত্তে উপ-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কক্সবাজার নিজে অথবা তার অধীনস্ত একজন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উক্ত অনুসন্ধান কাজে স্ব-স্ব নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

এমতাবস্থায়, দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ (সংশোধিত ২০১৯) মোতাবেক অনুসন্ধান সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের (মতামত/সুপারিশের স্বপক্ষে কাগজপত্র/রেকর্ডপত্রের কপি ও প্রতিবেদনে পতাকা চিহ্নিত করে) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

সূত্রে জানা যায়, চৌফলদন্ডী মৌজার নিম্ন তফলোক্ত জমি ১৯৮৬ সাল হতে ২০০৫ সালের মধ্যে চৌফলদন্ডীসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছে নিজ টাকার প্রয়োজনে জমিদারখ্যাত মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বিক্রি করে দিয়ে জমি বুঝিয়ে দেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ উক্ত জমির গ্রহীতাগণ নিজের নামে খতিয়ান সৃজন করে সন সন খাজনা প্রদান করে ভোগ দখল করে আসছে। অনেকে তাদের নামে সৃজিত খতিয়ান মুলে বিক্রি করেন তারাও ভোগ দখল করেআ সছে। উক্ত জমিতে অনেকে ঘরবাড়ী দোকান ঘর পুকুর খনন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। হঠাৎ ২০০৭ সালে ঢাকার এক কোম্পানীর যার নাম ওয়াই.আর.এস. ফ্যাশন কনসেপ্ট লিঃ এর কাছে মোঃ দিজল ইসলাম, পিতা- মোঃ ইয়াকুব হোসেন ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আইপ্রেম বাংলাদেশ লিঃ সাং-সয়াধনগড়া (নতুন বগুড়া

সড়ক) ডাকঘর+উপজেলা ও জেলা-সিরাজগঞ্জ। বর্তমান ঠিকানা-১৬ ডি কর্নকডরিজেন্সি ১৯/১ পশ্চিম পান্থপথ ঢাকা এর ৭৯৮নং ২১/০৩/২০০৭ তরিখ এর নামে প্রতারনামূলক আমমোক্তারনামা সৃজন করেন।

এবং উক্ত আমমোক্তারনামার যোগসাজসের মাধ্যমে করে নিম্ন তফসিলোক্ত জমি ৩৬৯৮ নং বন্ধক দলিল সৃজন করে ওয়াই.আর.এস. ফ্যাশন কনসেপ্ট লিঃ নামে ভুয়া কোম্পানী গঠন করেন। মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় কোম্পানীর ডাইরেক্টর ৩নং ক্রমিকে আমমোক্তার নামা দাতা মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর নাম। উক্ত কোম্পানীর চেয়ারম্যান ও ডাইরেক্টর মিলে ওয়াই, আর,এস, ফ্যাশন কনসেপ্ট লিঃ  নাম দিয়ে ঢাকার অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান পিপলস লীজিং এণ্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের নিকট হতে নিম্নোক্ত তপসিলি জমি বন্ধক রেখে ১৬ কোটি ৬৮ লক্ষ ৫ হাজার ৮৯৭ টাকা ঋণ গ্রহণ করে ভাগ বাটোয়ারা করে পরবর্তীতে উক্ত ঋনের টাকা পরিশোধ না করে তালবাহনা শুরু করেন। পরবর্তীতে পিপলস লীজিং এন্ড ফাইন্যান্সিল সার্ভিসেস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ভুয়া ওয়াই,আর,এস, কোম্পানীর বিরুদ্ধে ৩২০/২০১৩ সালে অর্থঋণ আদালত ঢাকা-২ এ মামলা করেন। উক্ত ভুয়া কোম্পানী মামলার কোন ধরনের প্রতিদ্বন্ধিতা ও সাড়া না দিয়ে গা ডাকা দেন। আদালত পিপলস লীজিং কোম্পানীর পক্ষে অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে ডিক্রী প্রদান করেন। পরবর্তীতে অর্থঋণ আদালত ৭১/২০১৫নং মামলা মূলে অর্থ ঋণ জারী মামলা ০৫/২০১৬ মূলে তপসিলোক্ত জমি গুলো আদালতের মাধ্যমে নিলাম ডাক দেন।

এই উপলক্ষ্যে এলাকার মাইকিং ও ঢোল প্রচার করতে গেলে ভুক্তভোগী গরীব অসহায় জমির মালিকগণ জানতে পারেন তাদের ক্রয়কৃত জমি মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ভুয়া কোম্পানী গঠন করে তাদের কাছে বিক্রিত জায়গা গোপনে বন্ধক দিয়ে সুদাসলে ১৭ কোটি ২৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭শত ৮৪ টাকা ঋণ নিয়ে কোম্পানীর কথিত পরিচালকগণ পলাতক রয়েছে। 

উক্ত বিষয়ে ভুক্তভোগী স্থানীয় অসহায় জমির মালিকগণ আইনগত প্রতিকারের লক্ষ্যে মাননীয় অর্থ ঋণ আদালত কক্সবাজার-এ প্রতারণার মাধ্যমে চাষীদের জমি পুনরায় বন্ধক দিয়ে ঋণ নেয়ার বিরুদ্ধে আইনের শরণাপন্ন হন। যা ইতোমধ্যে কক্সবাজারের দুদকের উপ-পরিচালক তদন্ত শুরু করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ