নীলফামারীতে জীবনযাত্রা ব্যাহত, মাঘের শেষে বৃষ্টিপাত


মো. সাদিকউর রহমান শাহ্ (স্কলার) রংপুর ব‍্যুরোঃ 

নীলফামারী জেলায় শুক্রবার ভোর রাত থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা মাঝারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন আলুচাষী, ইরি বেরো রোপন ও দিনমজুররা।

বৃষ্টি পাতের ফলে নীলফামারী ও কিশোরগঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় আলুর ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায়, পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষীরা। সদর উপজেলার পৌরসভার কৃষক আবু বক্কর বলেন, আমি এবার ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। রাত থেকে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে সব আলু পঁচে যেতে পারে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, বৃষ্টিতে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হবে। বিশেষ করে আলু ক্ষেতগুলোতে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকলে পঁচে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এই সমস্যা উত্তোরনে কৃষী বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টিতে হাড় কাপানো শীত জেঁকে বসেছে। বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে কৃষককুল ফসলি মাঠে নামতে না পারায় ইরি বোরো রোপন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।

এদিকে বৃষ্টির কারণে নীলফামারীতে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমেছে। তবে নিম্ন আয়ের মানুষ কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভাড়া না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অটোরিকশা-ভ্যানচালকরা। অটোরিকশা চালক আজিজুল বলেন, সকাল থেকে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। মানুষজনের চলাচল নেই। অন্যদিন সকালে ৫০ টাকার মতো আয় হলেও, আজ যাত্রীদের দেখা নেই। শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে দিন-মজুরের হাটে বসে থাকা বাপ্পী বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। আজ মনে হয় কপালে কাজ জুটবে না। বাড়িতে ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।

দমকা বাতাসের কারনে সকাল ১১টা থেকে নীলফামারী জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় নেসকো জানান, ঝড়ো বাতাসের কারনে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের তারে ক্রুটি দেখা দিয়েছে। যা সারিয়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিস সুত্র জানায়, গত ২৪ঘন্টায় ১২দশমিক ২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ছয়টা পযুন্ত। ১মিলিমিটার এবং শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পযুন্ত। ১১ দশমিক ২ মিলিমিটার রেকর্ড করেছে। 

খনার বচন আছে 'যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পুণ্যদেশ।' খনা মাঘের শেষের বৃষ্টিকে আশীর্বাদপূর্ণ আখ্যা দিয়েছিলেন তার সময়ের কৃষি-পঞ্জিকামতে। ফলে মাঘের শেষে বৃষ্টি হলে জমি নরম ও সরস হয়, চাষাবাদে ইতিবাচক ফল বয়ে আনে। তবে দমকা বাতাস ও বৃষ্টি জনজীবনকে আরও বেশী কাহিল করে তুলেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ