সৈয়দপুরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের নির্মাণাধীন বাড়ি নিলামের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন


মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুরঃ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে মুক্তিযদ্ধে শহীদ পরিবারের নির্মাণাধীন বাড়ি নিলামের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পবিবারের ব্যানারে আজ সোমবার দুপুরে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে সৈয়দপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বেলা ১১টা থেকে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে শহীদ পরিবারের সদস্য ছাড়াও সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষজন অংশ নেন। 

মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য বলেন শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ’ ৭১ এর  সৈয়দপুর শাখার সভাপতি মো.  মুজিবুল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান মো. আব্দুর রশিদ, সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সরকার মো. কবির উদ্দিন ইউনুছ,ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান লিটন, রবিউল আউয়াল রবি, মোস্তফা কামাল, মাসুদুর রহমান লেলিন, আমিনুল ইসলাম মুন্না, মো. দুলাল ও বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সৈয়দপুর পৌর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস মিন্টু প্রমূখপরে নিলামের  প্রতিবাদে শহীদ আব্দুল রহমানের কন্যা রশিদা বেগমের আহবানে এক সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। 

সৈয়দপুর প্রেস ক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বলেন শহীদ পরিবারের সন্তান মো. মহসিনুল হক মহসিন, ইমতিয়াজ প্রবাল, আব্দুর রশীদ প্রমূখ। সংবাদ সম্মেলনে ওই শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, রেলওয়ের অভিযানকালে ওই  জায়গার বরাদ্দপত্র (লীজ) দেখানো হলেও তা আমলে নেননি রেলওয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তারা অনেকটাই প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও তড়িঘড়ি করে তাৎক্ষণিক নিলামের মাধ্যমে বাড়িটির কোটি টাকার অবকাঠামো (স্টীল স্ট্রাকচার) মাত্র ৬ লাখ টাকায় নিলাম সম্পন্ন করে। 

সংবাদ সম্মেলনে একজন শহীদ পরিবারের বাড়ি এভাবে নিলামের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে ওই নিলাম প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, তদানিন্তন  পাকিস্তান আমলে সৈয়দপুর শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে রেলওয়ের জায়গা  বৈধভাবে বরাদ্দ নিয়ে বসবাস শুরু করেন নীলফামারী সদরের সোনারায় ইউনিনের আব্দুর রহমান। ’৭১-এ  মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ১৭ এপ্রিল নিজ বাড়ি সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তাকে গুলি করে  হত্যা করে হানাদার পাকিস্তানীবাহিনী। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ওপর মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আব্দুর রহমানের মেয়ে রশিদা বেগম রেলওয়ের ওই বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছেন। 

সম্প্রতি তিনি  সেখানে একটি বহুতল বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে নির্মাণাধীন ওই বাড়ির কাজ প্রায় সত্তর ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রসঙ্গত : গতকাল রবিবার  (২১ মার্চ) রেলওয়ের পাকশী ভূ-সম্পত্তি বিভাগের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে রেলওয়ে জায়গায় অবৈধ দখলদার মুক্ত ও চিহ্নিতকরণে লক্ষ্যে  সৈযদপুরে এক অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে ওই শহীদ পরিবারের বাড়িটি কয়েক মিনিটে  নিলাম সম্পন্ন করেন। অনেকেই  এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ