পঞ্চগড়ের আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীর লড়াই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা



মো. কামরুল ইসলাম কামু, পঞ্চগড়ঃ   

দেশে রাজনীতির মাঠ সরব না হলেও পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে মাঠে এখন আওয়ামীলীগ। পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সরব প্রচারনায় মাঠে ময়দানে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা। শহরের পথে-প্রান্তরে ব্যানার ফেষ্টুন ও বিল বোর্ডে রমরমা প্রচারনা। 

কেউ কেউ  ভোটের আগাম শুভেচ্ছা দোয়া প্রার্থনায় বিলবোর্ডে দূশ্যমান। নবীণ-প্রবীণ সবাই তাদের নিজ নিজ বিলবোর্ড দিয়ে শহরের আনাচে-কানাচে ভরিয়ে তুলেছে। আওয়ামীলীগ পর পর তিনবার ক্ষমতায় থাকার সুবাদে সহসা জনগনের সাথে যোগযোগ করে যাচ্ছেন তারা। জেলা আওয়ামীলীগের সবোর্চ্চ পর্যায় থেকে নিচ পর্যন্ত আওয়ামীলীগের সকল নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনায় সবর্ত্র সোচ্চার। 

সামনে পৌর নির্বাচন সহসা হবে ‘ এমন ঘোষনার পর পরেই আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে সরব। বিএনপি’র রাজনৈতিক পদচারনা স্থবির । অন্যদিকে আওয়ামীলীগের সব নেতা-কর্মী মাঠে। মিছিল মিটিংএ তাদের অবস্থান সরব না হলেও তারা রাজনীতিতে সরব অবস্থানে।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন  রেলপথমন্ত্রী হওয়ার পর পঞ্চগড়ের আওয়ামীলীগ চাঙ্গা হয়ে ওঠে। দেশের সীমান্তবতী উত্তরের শেষ জেলা পঞ্চগড় । গত নির্বাচনে পঞ্চগড়ের দুটি আসন পেয়ে যান আওয়ামীলীগ। বিএনপি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পঞ্চগড় তথা পুরো জেলায় রাজনীতিতে এক ধরনের স্তিমিত হয়ে যায়। 

তাছাড়া মামলা-হামলার ভয়ে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন যেমন ছাত্র দল যুবদল,কৃষক দল সব দলের নেতা-কর্মীরা গা ছাড়া হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিকালে বিএনপি শহীদ জিয়ার জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী পালন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে সংগঠনের অফিস খোলেন। তারপরেও মূল দরজার ফটকে পুলিশ অবস্থান করেন। 

এদিকে জেলা বিএনপি’র মধ্যে গ্রুপিং-দ্বন্দের কারনে বিএনপি’র নেতা-কর্মী বিভক্ত হয়ে পড়েন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জেলা কমিটি পূন:গঠনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ ফরহাদ হোসেন আজাদ কে পঞ্চগড় জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব করেন। এতে বিএনপি’র প্রবীণ নেতা পঞ্চগড়ের স্থায়ি বাসিন্দা মোঃ জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু কে আহবায়ক করা হয়।

এরপর তাদের দু’জনের নেতৃত্বে জেলা বিএনপি’র একাংশ পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের মাঝে  বিষয়টি অবগত করান। ওই সময়ে তাদের দুজনকে একটি সুনিদিষ্ট সময় দিয়ে জেলা কমিটি সহ সকল পর্যায়ে কমিটি গঠন র্পূবক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশণা দেন। তবে করোনার প্রার্দূভাবে তা হয়ে ওঠেনি। 

সে ক্ষেত্রে জেলা বিএনপি’র অবস্থান আগের জায়গাতেই রয়ে যায়। বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক স্পীকার ব্যরিষ্টার মুহম্মদ জমির উদ্দীন সরকার আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মজাহারুল হক প্রধানের নিকট পরাজয় বরণ করেন’। 

বিএনপি’র একাধিক সূত্রমতে জানা যায় ‘ পরাজয় বরণ করার পর সাবেক স্পীকার ব্যারিষ্টার মুহম্মদ জমির উদ্দীন সরকার ও পঞ্চগড় পৌরসভার বর্তমান মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলামের সাথে দ্বন্দের কারনে জেলা বিএনপি’র মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরে। 

এরই মধ্যে তৎকালিন ব্যরিষ্টার মুহম্মদ জমির উদ্দীন সরকারের এপিএস-১ মোঃ আব্দুল মজিদ কে নিয়ে জেলা কমিটি গঠন নিয়ে বিএনিপ’র জেলা কমিটিতে গ্রুপিং চরম আকার ধারন করে।

অপরদিকে পঞ্চগড় পৌর মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে নিজেদেরকে জন মানুষের কাছে অবস্থান তুলে ধরছেন। এদের মধ্যে রয়েছে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোছাঃ জাকিয়া খাতুন। এছাড়া ও রয়েছেন পঞ্চগড় পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবীর উজ্জল, জেলা আওয়ামীলীগের  সহ-সভাপতি মোঃ আবু তোয়াবুর রহমান,জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম পল্লব, 

জেলা সেচ্ছাাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ মোখলেছার রহমান রেজা। তারা সকলেই পঞ্চগড় পৌর মেয়র পদে নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে দৌড়ঝাপে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। এরই মধ্যে গত পৌর নির্বাচনের আওয়ামীলীগের পরাজিত প্রার্থী জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোছাঃ জাকিয়া খাতুন এখন পৌর এলাাকায় চষে বেড়াচ্ছেন।

’উঠোন বৈঠক সহ সবার কাছে গিয়ে সুখ-দুঃখের খবর নিচ্ছেন’। ছুটে চলেছেন স্থািনয় ব্যবসায়িদের কাছে।’শুনছেন তাদের নানা সমস্যার কথা।’ জাকিয়া খাতুনের সাথে থাকছেন নারী নেত্রী সহ নেতা-কর্মীরা।’ প্রতিদিন ফেসবুৃকে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরছেন’। তিনি মেয়র হলে ব্যবসায়িদের সমস্যা আর থাকবেনা’। শহর হবে’ আধুনিক থেকে আরো আধুনিক।’ মোছাঃ জাকিয়া খাতুন বলেন ‘ অবশ্যই নৌকা প্রতীক আমি পাবো’।   

শতভাগ নিশ্চিত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন ‘ বিয়ের পর নিজ বাড়ি দিনাজপুর থেকে আমি পঞ্চগড়ে আসি এবং আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি।’ আমি দিনাজপুরে ছাত্রলীগ করতাম।’

এদিকে বর্তমান পঞ্চগড় পৌর মেয়র বিএনপি’র জনপ্রিয় নেতা পৌর বিএনপি’র সভাপতি জনসেবক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন‘ পরিবেশ পরিস্থিতি বলে দিবে আমি নির্বাচন করবো’ কিনা। সময় হোক তবে জানাবো’। মোঃ তৌহিদুল ইসলাম তিনবার পৌর চেয়াম্যান এবং দুইবার মেয়র নিবািচত হন।’ গত নির্বাচনে তিনি পেয়েছেন ২২ হাজার ৮শ ’ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আওয়ামীলীগের প্রার্থী মোছাঃ জাকিয়া খাতুন পান ৭০০০ হাজার  অল্প কিছু ভোট’। 

মোছাঃ জাকিয়া খাতুন জানান ‘ দল ঠিক থাকলে আমার বিজয় নিশ্চিত।’ তিনি রাতদিন মাঠে রয়েছেন।’ উল্লেখ্য একদিকে আওয়ামীলীগ বলছে উন্নয়ন আর পরির্বতনের কথা । বিএনপি’র মনোভাব জনগনের রায় আসবে জনপ্রিয়তায়।’ বিএনপি’র অনেকে বলছেন ‘বর্তমান মেয়র আবার ফিরবে মেয়র পদে।’ আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী বলছে এবার আমাদের মনোনীত প্রার্থী হবে ‘ পৌর মেয়র।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ