ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে স্বাবলম্বী প্রফুল্ল

মো. আবু নাঈম, পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার প্রফুল্ল রায়ের জীবন চিত্র বদলে দিয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) খামার। ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে অর্থনৈতিক ভাবে হয়েছেন স্বাবলম্বী। এই কম্পোস্ট বিক্রি করে তিনি মাসে আয় করেন ১০ হাজার টাকা।


উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের লতিঝারী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কমন ইন্টারেস্টেড গ্রুপ (সিআইজি) সমবায় সমিতির উদ্যোগে এবং ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম (এনটিপি) প্রকল্পের সহযোগিতায় প্রফুল্ল রায়ের মত আরো অনেকেই বাড়ির উঠানে একচালা টিনের ঘর করে রিং, স্লাব দিয়ে উৎপাদন করছে ভার্মি কম্পোস্ট। 

গ্রামটির নাম দেয়া হয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট পল্লী। লতিঝারী সিআইজি পুরুষ সমাবায় সমিতি নামের একটি সংগঠনও রয়েছে তাদের। সংগঠনে মোট ৩০ জন সদস্য থাকলেও উৎপাদন ও বিপণনে এগিয়ে প্রফুল্লই।


প্রতি মাসে এক হাজার কেজি ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন করেন তিনি। প্রতি কেজি দশ টাকা দরে মোট ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয় এই কম্পোস্ট। উৎপাদিত এই কম্পোস্ট যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। নিজেদের সবজি ক্ষেতে ব্যবহার করার জন্য গ্রামের কৃষকরাও প্রফুল্ল রায়ের খামার থেকে কিনছেন উন্নতমানের এই ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার)। 

উপকৃতও হচ্ছেন কৃষকরা। এতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রবণতা কমছে আর পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 


জানা গেছে, গ্রামীণ লাঙ্গল হিসেবে পরিচিত কেঁচো এবং গোবরই ভার্মি কম্পোস্টের প্রধান উপকরণ। সিমেন্টের তৈরি রিং, স্লাবে পরিমাণ মত গোবরের সাথে কেঁচো ছেড়ে চটের বস্তা দিয়ে এক মাস ঢেকে রাখলেই তৈরি হয় উন্নত মানের ভার্মি কম্পোস্ট তথা কেঁচো সার।


প্রফুল্ল রায় বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগীতায় ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন এবং মাটির উত্তম স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নামের এক প্রযুক্তির আওতায় কেঁচো লালন-পালন, গোবর সংগ্রহ, রিং, স্লাবে দেয়া, কম্পোষ্ট তৈরির পর সেগুলো সংগ্রহ করা, কম্পোস্ট প্যাকেজিং এবং বাজারজাতকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। 

পরে নিজের আবাদী জমিতে ব্যবহারের জন্য স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করি। দিন দিন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করছি।


উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক  বলেন, বর্তমানে রাসায়নিক সারের অতিব্যবহারে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু পরিবেশবান্ধব এই কম্পোস্ট মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে। এই কম্পোস্ট ব্যবহারে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। 

কৃষি অফিস এই ধরনের উদ্যোগে যাবতীয় উপকরণ, প্রশিক্ষণ ও কেঁচো দিয়ে পরিবেশবান্ধব কম্পোস্ট উৎপাদনে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ