মো:জালাল উদ্দিন, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি,
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ‘শিধুলী, চলনালী ও পোয়ালশুড়া গ্রাম’বাঙ্গির গ্রাম হিসাবে পরিচিত। সেই গ্রামের খেত থেকে বাঙ্গি তুলে বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। তখনো সূর্যের আলো ঠিকমতো ফোটেনি। কৃষকেরা ব্যস্ত জমি থেকে বাঙ্গি তুলতে। সকাল সাড়ে ছয়টার আগে বাঙ্গিগুলো বাজারে নিতে হবে। তা না হলে বাঙ্গিগুলো বিক্রি করার জন্য কোন ক্রেতা পাওয়া যাবেনা।
বাঙ্গির ম ম ঘ্রান ধারাবারিষা ইউনিয়নের ‘শিধুলী, চলনালী ও পোয়ালশুড়া গ্রামে দেখা যায়। আজ রবিবার ভোরে বাঙ্গির গ্রাম হিসেবে পরিচিত জায়গাটিতে গিয়ে দেখা যায়, সকালের হাট ধরতে কৃষকদের তোড়জোড়। খেত থেকে বাঙ্গি উঠিয়ে ভ্যান ও ডালিতে রাখছেন। কৃষকেরা জানান, তাঁদের এলাকার বাঙ্গির সুনাম সারা দেশে রয়েছে।
ওই তিন গ্রামসহ পাশের গ্রামের কিছু অংশ মিলে ৪২০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয় বলে জানান কৃষকেরা। প্রায় ১ হাজার পরিবারের জীবিকা নির্ভর করে এর ওপর। বাকি সময় চলে আমন ও অন্যান্য ধানের আবাদ।
সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থা ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় অটোভ্যান-ভুটভুটিতে করে বাঙ্গি নিয়ে বাজারে আসে কৃষকরা। সরেজমিনে গিয়ে শিধুলী বাজারে দেখা যায়, বাঙ্গির ম-ম গন্ধ এলাকাজুড়ে। গাঁয়ের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে গেলে বাঙ্গির ঘ্রাণ নাকে আসে। কৃষক শ্রী বিমল কুমার বলেন, আমাদের এই এলাকার বাঙ্গি চাষ হয় তবে এখানে সারের ব্যবহার খুবই কম। এটা বাঙ্গির গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এই বাজার থেকে বাঙ্গি রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় যায়।
বাঙ্গিচাষি এনামুল হক জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই রসুনের জমির সাথে সাতী ফসল হিসাবে জমিতে রোপণ করা হয় বাঙ্গিবীজ। একটি বাঙ্গি গাছ বড় হতে সময় লাগে তিন থেকে ৪ মাস। নিয়মিত পরিচর্যা করার পর চাষিরা পুরো বৈশাখ মাস বাঙ্গি তুলতে পারেন। স্থানীয় কৃষক রুহুল আমিন জানান, তাঁর জমিতে বাঙ্গির ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে ব্যাপারী কম আসার ফলে লোকসানে পড়তে হবে তাকে।
সিরাজগঞ্জ থেকে বাঙ্গি কিনতে আসা মো. জহির উদ্দিন বলেন, তিনি আট-নয়বছর ধরে গুরুদাসপুর থেকে বাঙ্গি কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গা বিক্রি করেন। গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এ বছর বাঙ্গির ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, গুরুদাসপুর এলাকায় বাঙ্গির ফলন বেশ ভালো হয়। ওই এলাকার প্রায় ৪২০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে দূরের ব্যাপারীরা কম আসায় দাম নিয়ে দূরচিন্তা রয়েছে কৃষকেরা।
0 মন্তব্যসমূহ