নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে পুলিশ ও গ্রামবাসির সংঘর্ষে ওসি সহ আহত ৩

ক্রাইম রিপোর্টারঃ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন নীলফামারী জেলা। কিন্তু পুলিশের লাঠি চার্জে সামাজিক দূরত্বে ১২টা বেজে ঝুঁকি ডেকে এনেছে পুলিশ বলে অভিযোগ উঠেছে। নীলফামারী কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ঈদগা ময়দান নদী ভাঙ্গনের হাত হতে রক্ষার্থে বালু দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাধ নির্মানে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার(২৭ এপ্রিল/২০২০) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়াডের হাটখোলা গ্রামে। এ ঘটনায় উপজেলা হাসপাতালে আহত ওসি (তদন্ত) ও এক দম্পক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে। এখান থেকে ওসি (তদন্ত) মোঃ মফিজুল হককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এলাকাবাসী জানায়, গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া চারালকাটা নদী খননে গ্রামের ঈদগা ময়দানটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। ফলে গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় ঈদগা ময়দান রক্ষার্থে বালির বাধ নির্মানের কাজ শুরু করে। এ অবস্থায় ওই গ্রামের মৃত ঈসাউদ্দিনের ছেলে তছলিম উদ্দিন ঈদগা ময়দানের জায়গা তার নিজের দাবি করে গ্রামবাসীকে বালির বাধ নির্মানে বাধা দিয়ে তার লোকজন নিয়ে ২১ এপ্রিল গ্রামের আলমগীর হোসেন সহ চারজনকে মারপিট করে। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় ২২ এপ্রিল তছলিম উদ্দিন সহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৭)। অপর দিকে তছলিম উদ্দিনও পাল্টা মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। তছলিম উদ্দিনের মামলার তদন্ত কারী এসআই আব্দুল ওহাব। আজ সোমবার সকালে যখন এলাকাবাসী পুনরায় ঈদগা ময়দানের সামনে সেচ্ছায় বালির বাধের কাজ করছিল সে সময় তছলিম উদ্দিন এসআই আব্দুল ওয়াবকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে আসে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, উক্ত এসআই ঘটনাস্থলে এসেই মানুষজনকে লাঠি পেটা করতে থাকে। প্রতিবাদ করতে গেলে গ্রামের ইলিয়াছ হোসেনকে(৪৫) পানি ফেলে মারপিট ও পানির নিচে পা দিয়ে চেপে ধরেন ওই এসআই। স্বামীকে উদ্ধার করতে ছুটে গেলে ইলিয়াছ হোসেনের স্ত্রী তহমিনা বেগমকেও(৩৫) ওই এসআই লাঠি দিয়ে বেধরক পেটাতে থাকে। গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ওই এসআইকে ধাওয়া করলে তিনি দৌড়ে পালাতে থাকেন। খবর পেয়ে কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মফিজুল হকের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ এসে গ্রামবাসীর উপর লাঠি চার্জ করতে গেলে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ অবস্থায় পুলিশের দলটি একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বারী। তার সহায়তায় উপজেলা হাসপাতাল হতে এ্যাম্বুলেন্স এনে আহত ওসি(তদন্ত) ও আহত দম্পতিকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। এখান থেকে আহত ওসি (তদন্ত)কে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এ সময় গ্রামবাসী দোষি পুলিশ সদস্যদের বিচার ও অপসারন দাবি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল। তিনি তদন্তের মাধ্যমে দোষি পুলিশ সদস্যেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বারী জানান থানার এসআই আব্দুল ওহাবের কারনে আজ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ