চুরি ও পরকীয়ার অপবাদে গৃহবধূর চুল কর্তন- আটক ৩
 |
| প্রতীকী ছবি। |
যশোর চৌগাছায় পরকীয়া ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির অপবাদ দিয়ে এক গৃহবধূকে (৩৫) শারীরিক নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দিয়েছে ভাড়া বাসার মালিকের স্ত্রী ও তার দুই মেয়ে। একই সঙ্গে ওই নারীর (৪) বছর বয়সী মেয়েকেও মারধর করা হয়েছে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ ও তার মেয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নির্যাতিত নারীর স্বামীর করা মামলায় ভাড়া বাড়ির মালিক জাফর ইমামের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া (৪৫) ও তার দুই মেয়ে জান্নাতারা ইমাম (২৪) ও সুমাইয়া ফারজানাকে (২০) গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার গভীর রাতে চৌগাছা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কারিগর পাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ৮ মাস ধরে তিনি স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে (৪) নিয়ে চৌগাছা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কারিগরপাড়ার জাফর ইমামের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গত ২৬ জানুয়ারি তিনি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে রেখে গ্রামের বাড়ি অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামে যান। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি বাড়ির মালিকের মেয়ে সুমাইয়া ফারজানা মোবাইল ফোনে জানায়, তার স্ত্রী তাদের বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে পালিয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি ভাড়া বাড়িতে এসে ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে স্ত্রীকে খুঁজে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় একটি মামলা হয় এবং পুলিশ তার স্ত্রীকে আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বুধবার তারা ভাড়া বাড়িতে যান। সেখানে রাত ১২টার দিকে ভাড়াটিয়ার স্ত্রী ও দুই মেয়ে তাদের শোয়ার ঘরে গিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নারীটিকে বেদম মারপিট করে। এ সময় তার শিশু কন্যা (৪) কান্নাকাটি করলে জান্নাতারা ইমাম তার গলা টিপে ধরে এবং ঘরের চৌকির সঙ্গে আঘাত করে। তারা ওই নারীর স্বামীকে বলে, ‘হয় তোর স্ত্রীকে স্বর্ণ দিতে বল, না হলে এখনি তার মাথার চুল কেটে (ন্যাড়া) দিবি।’
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমি চুল কাটতে অস্বীকার করলে তারা আমার শিশু কন্যাকে নিয়ে দোতলার দিকে উঠে যায় ও মারপিট করতে থাকে। এ সময় মেয়ের কান্না ও স্ত্রীর আর্তচিৎকার সহ্য করতে না পেরে বলি মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে এসো আমি স্ত্রীর চুল কেটে দিচ্ছি। এরপর তারা মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে আসে এবং আমার হাতে একটি কাঁচি (কাইচি) দিয়ে স্ত্রীর চুল কেটে দিতে বাধ্য করে। আমি বাধ্য হয়ে স্ত্রীর চুল কেটে দেয়ার পরও তারা কোদালের আছাড় দিয়ে আমার শিশু কন্যা ও স্ত্রীকে মারপিট করে। পরে চিৎকার শুনে পাশের বাড়িগুলোর বাসিন্দারা এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে বিষয়টি আমি থানা পুলিশকে জানালে এ বিষয়ে মামলা হয়।
/জনকন্ঠ।
0 মন্তব্যসমূহ