পঞ্চগড়ে ভিজিডি’র সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অসহায় দুঃস্থদের

মোঃ কামরুল ইসলাম কামু, পঞ্চগড়ঃ 
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সঞ্চয় উত্তোলনকারী সংশ্লিষ্ট এনজিও’র বিরুদ্ধে। ‘হিউম্যান রাইটস ফান্ডা মেন্টাল ’ নামের এনজিওর মাঠকর্মীরা সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ বোদা উপজেলার ৫ নং বড়শশী ইউনিয়নের সুবিধাভোগী দুস্থ মহিলাদের। 

সরেজমিনে জানা যায়, ২০১৭-১৮ সালে উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নে দুস্থ মহিলা ভিজিডি কার্ডধারী ৭২০ জন । দুই বছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ তাদের সুবিধাভোগী নির্বাচিত করেন। তাদের সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলনের জন্য হিউম্যান রাইটস ফান্ডা মেন্টাল নামে এনজিওকে নিযুক্ত করেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। প্রতি মাসে ভিজিডির চাল উত্তোলনের সময় তারা ২০০ টাকা করে এনজিও মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে সঞ্চয় জমা করেন। 

গত ১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে তাদের ভিজিডি কার্ডের মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হয়। পরের মাসে সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়ের টাকা সুদাসল ফেরত দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু এখনও ইউনিয়নের ১৫০ জন কার্ডধারী নারী কোন সঞ্চয়ই পেল না, বার বার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে ধর্না। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি ওই ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারী সুবিধাভোগীরা। 

বদেশ্বরী গ্রামের ত্রিফলা রায়,চন্দনা রায়, জাহানারা বেগম জানান, গত দুই বছরে কার্ডের চাল নেওয়ার সময় প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয়ের জন্য দিয়েছি। সবাই টাকা ফেরত পেল কিন্তু আমরা ১৫০ জন মহিলা টাকা এখনও পেলাম না । আমরা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাইনি । আর কার কাছে গেলে আমাদের কষ্টের টাকা সঞ্চয় ফেরত পাব। 

এদিকে হিউম্যান রাইটস ফান্ডা মেন্টাল তৎকালীন ম্যানেজার মো. ইমামুল হক জানান,আমাদের কাছে কেউ কোন সঞ্চয়ের টাকা পাবে না আমরা তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে প্রত্যয়ন নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.আফজাল হোসেন বলেন, ভিজিডি সঞ্চয়ের টাকার বিষয়টি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বারবার জানানো হয়েছে। 

একমাস সময় চেয়েছেন সময় পার হয়ে গেছে। এখন শুনতেছি ওই কর্মকর্তা অসুস্থ। এদিকে ভিজিডি কার্ডধারী মহিলারা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বোদা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মরিয়ম খানম জানান,বড়শশী ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ড সঞ্চয়ের টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। ওই সংস্থার নামে মামলা করে টাকা তুলতে হবে। 

হিউম্যান রাইটস ফান্ডা মেন্টাল এনজিওর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম জানান, লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি,তবে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে ই-মেইলে কতজনে কত টাকা পাবে জানানো হলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর পঞ্চগড় উপ-পরিচালক রুখশানা মমতাজ জানান ,পঞ্চগড় সদরেও এমন অভিযোগ ছিল আমি ঔ সংস্থার হেড অফিসে কথা বলে টাকা ফেরত নিয়েই প্রত্যয়ন দিয়েছি। বোদা উপজেলা কর্মকর্তা আগেই সেই কাজটা করলে সমস্যা ছিল না। টাকা উত্তোলনের ফাঁক ফোকর আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, হয়ত ঐ এলাকার মাঠকর্মী সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাত করেছেন।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী জানান, ভিজিডি সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ