জাতীয় নির্বাচনী ডিউটির বেতন-ভাতায় কোটি টাকার দুর্নীতি, নেপথ্যে কক্সবাজার জেলা কমান্ড্যান্ট, পর্ব-১

আমান, মোসলেম, ফখরুল, সাইফ ও জহির সহ আরো কয়েকজনের সিন্ডিকেটে জিম্মি পুরো জেলা

মো: মনছুর আলম (এম আলম): গত ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার জেলায় দায়িত্ব পালনকারী আনসার ভিডিপির বেতন-ভাতা নিয়ে কোটি টাকার দুর্নীতি হয়। জেলার ৫৫৬টি কেন্দ্রে তালিকা মোতাবেক পিসি, এপিসি, আনসার ও ভিডিপি সদস্য মিলে ৬৬৭২ জন মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী ডিউটি করেন। সরকারি নিয়মানুযায়ী জনপ্রতি ৬৩০০ টাকা করে ভেতন ভাতা ও ৬০০ টাকা করে আনুসাঙ্গিক খরচ সহ সর্বমোট সাড়ে ৪ কোটি টাকার বরাদ্দ আসে। এই বরাদ্দ থেকে বেতন-ভাতা হিসাবে কেউ কেউ ১ হাজার, কেউ আবার দেড় ২ হাজার এবং অনেকে ৩/৪ হাজার টাকা পর্যন্ত পেলেও আনুসাঙ্গিক খরচের টাকা মোটও পায়নি কেউ। বাকি কোটি টাকা আনসার ভিডিপি'র প্রতিটি ইউনিয়ন দলনেতা ও নেত্রী থেকে শুরু করে ধাপেধাপে ইউনিয়ন কমান্ডার ও থানা কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট যোগে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে পকেটে ভরেন। আর এসব দুর্নীতির নেপথ্যে থেকে নির্দিষ্ট একটা ভাগ পকেটে ভরে চুপ থাকেন জেলা কমান্ড্যান্ট অম্লান জ্যাতি নাগ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচনের পূর্ববর্তী আনসার ভিডিপি'র সদস্যদের ডিউটির তালিকা করার মুহুর্তে অনেকের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে আবার অনেককে বেতন-ভাতা প্রদানের সময় টাকা কেটে রাখার শর্তে নাম তোলা হয়। তবে ঐ তালিকায় আনসার ভিডিপি'র সদস্যদের নিজনিজ মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট নাম্বার দেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা থাকলেও তা পালন করা হয়নি। এমনকি নির্বাচনের সময় তালিকানুযায়ী প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্ব থাকা পিসি, এপিসি, আনসার ও ভিডিপি'র অনেক সদস্য ঘরে বসে থেকে চুক্তিভিত্তিক সাধারণ মানুষকে মাত্র কয়েকশ টাকার বিনিময়ে দায়িত্ব পালন করান। এসব দুর্নীতির কলকাঠি নেড়ে পুরো জেলা জিম্মি করে রেখেছেন আনসার ভিডিপি'র রামু থানার টিআই আমান উল্লাহ, উখিয়া থানার টিআই সাইফ উদ্দিন, মহেশখালী থানার কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম রাজিব, কুতুবদিয়া থানার টিআই (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মোসলেম উদ্দিন ফারুকী ও জেলা মনিটরিং সদস্য মো: জহির সহ আরো কয়েকজন। এছাড়াও আনসার ভিডিপি কক্সবাজার জেলা কমান্ড্যান্ট, থানা কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষক, ইউনিয়ন কমান্ডার, দলনেতা ও দলনেত্রীদের দূর্নীতি/ঘুষ লেনদেন উৎকোচ গ্রহণ মাসোহারা উত্তোলন সহ বিভিন্ন অনিয়মের সরেজমিন তদন্ত মতামত ও প্রমাণিত বিষয়াদির উপর ধারাবাহিক প্রতিবেদন চলবে।

এ বিষয়ে জেলা কমান্ড্যান্ট অম্লান জ্যাতি নাগ'র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পর্ব চলমান...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ