নীলফামারীর বামনডাঙ্গা নদী গ্রাস করেছে দখলদাররা বহমান নদী এখন মরা খাল


বিভাগীয় বার্তা পরিবেশক, রংপুরঃ

নীলফামারী শহর ঘেঁষে বয়ে গেছে বামনডাঙা নদী। এই নদীকে ঘিরে দেড়শ’ বছর আগে গড়ে উঠে শাখামাছা বন্দর। বামনডাঙা নদীপথেই দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্যবাহী বড় বড় নৌকা নিয়ে ভীড়তো এ বন্দরে। সে সময় এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান বন্দর ছিল এটি। এতে প্রসার ঘটে ব্যবসা বানিজ্যের। এই শাখামাছা বন্দরের তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় তৎকালীন নীলফামারী মহকুমা শহর। সেই সুগভীর বহমান বামনডাঙ্গা নদী আজ হারিয়েছে তার অতীত ঐতিহ্য, পরিনত হয়েছে জীর্ন শীর্ন ক্ষিনকায় একটি ছোট্র নদী। তবে নদী বললেও ভূল হবে। যে নদী পথে পাল তোলা পণ্যবাহী নৌকা চলতো সেই নদী মরে গিয়েও নীলফামারী শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে রেখে যাচ্ছে অগ্রনী ভূমিকা। 

স্থানীয়রা বলেছেন, বিভিন্ন স্থানে নদীটিকে দখলে নিয়ে নানান স্থাপনা তৈরি করায় সংকুচিত হয়েছে এর পরিধি। কোথাও কোথাও আবার মাটি ফেলে নিজের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছেন অনেকেই। নদীর দুই পারের পরিবারগুলো নদীতে বর্জ্য ফেলায় দুষিত হয়েছে পানি। এতে বাতাসে ছড়াচ্ছে রোগ জীবানু। লোকজন আক্রান্ত হচ্ছে রোগ-ব্যাধীতে। হারিয়ে গেছে দেশীয় প্রজাতির মাছ।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উৎপত্তিস্থল থেকে শেষ মাথার বিভিন্ন অংশ অবৈধ দখলে যাওয়ায় নদীর মালিকানা অনেকটা দখলদারের দখলে। নদী পারের বাসিন্দা বাবলু হোসেন পরিকল্পিত র্বার্তাকে বলেন, প্রায় দুই যুগ আগের কথা ‘যে নদীতে স্রােতের টানে দাঁড়ানো যেত না, সে নদী এখন নালা। প্রতিদিন মানুষ দখল করছে, গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব কেউ আর দেখেও দেখেনা!’ এক সময়কার খরস্রােতা এই বামনডাঙ্গা নদীতে এখন আর নেই তেমন প্রবাহ। যেটুকু নদীর আকার আছে সেটুকুও হারিয়ে যেতে বসেছে মানচিত্র থেকে। এতে করে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আগামী প্রজন্মের কাছে বামনডাঙ্গা নদী শব্দটি মুছে যাবে ইতিহাসের পাতা থেকে।

শুধু তাই নয় বর্তমানে সরকারি ভূমি দফতরের কাগজপত্র বা নকশাতেও এখন বামনডাঙ্গা নদীর অস্তিত্ব নেই। এক শ্রেণির ভূমি কর্মকতা-কর্মচারীর সহায়তায় দখলবাজরা নদীটিকে নিজস্ব জমি হিসেবে দাবি করে দখলে নিয়েছেন।  

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলৗ আমিনুর রহমান বলেন, বামনডাঙ্গাকে নদীর রুপ দিতে খনন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু নানান প্রতিকুলতার কারনে মাত্র এক কোটি টাকার কিছু বেশী ব্যয় করে খনন করা হয় ছয় দশমিক নয় মিটার। এতে বামনডাঙ্গাকে নদীর প্রকৃত রুপ দেয়া সম্ভব হয়নি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ