পঞ্চগড় চিনিকল বন্ধ ঘোষনায় হতাশা আর দিশেহারা হয়ে পড়েছে শ্রমিক


পঞ্চগড় থেকে কামরুল ইসলাম কামুঃ

শ্রমিক কর্মচারির প্রায় চার কোটি টাকা পাওনা রেখে পঞ্চগড় চিনিকলটি বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।পঞ্চগড়ের একমাত্র ভারি শিল্প এই চিনিকলটি বন্ধ ঘোষনায় চরম হতাশায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে স্থায়ী-মৌসুমী সহ প্রায় সাড়ে ৭ শ্রমিক-কর্মচারি।

পঞ্চগড় চিনিকল সূত্রে জানা যায় ‘ ১ ডিসেম্বর শিল্প সচিবের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পঞ্চগড় সহ উত্তরাঞ্চলের ৬টি চিনিকল বন্ধ ঘোষনা করা হয়। তার মধ্যে পঞ্চগড় চিনিকলের নাম রয়েছে। অথচ পঞ্চগড় চিনিকলটিতে আগামি ২৫ ডিসেম্বর আখ মাড়াই শুরুর হওয়ার দিনক্ষণ ঠিক ছিলো। চিনিকলের সংশ্লিষ্টরা জানান ‘ এর মধ্যে মিল চালুর কাঁচামাল সহ সব রকম মালামাল সংগ্রহ করা ছিলো’।

পঞ্চগড়চিনিকলটিতে সাড়ে ৭ শ্রমিক-কর্মচারির মধ্যে স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারি রয়েছে ২৮০ জন। বাকি সব চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ। পঞ্চগড় চিনিকলের অনেক শ্রমিক-কর্মচারির চোখ অশ্র-সজল দেখা যায়। তারা কেউ কেউ আবেঘময় হয়ে পড়ে।

এদিকে গত তিন মাস ধরে শ্রমিক-কর্মচারির পাওনা রয়েছে ‘ ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা বলে নিশ্চিত করেন মহা-ব্যবস্থাপক(অর্থ) মোহাম্মদ নাজমুল হক। জানা যায় মিলটিতে অবিক্রিত চিনি রয়েছে ৩ হাজার মে্িরটক টন। যারমূল্য ১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অপরদিকে শুক্ররবার পঞ্চগড় বাজারের ব্যবসায়িরা জানান মিল বন্ধ হওয়ার ঘোষনার সাথে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে।

পঞ্চগড় চিনিকলের কর্মচারি শহিদুল হক বলেন ‘ ১২/০৭/ ৮০ থেকে চিনিকলটিতে চাকুরি করে আসছি। এখানে চাকরি করে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছি। আজ মিলটিতে বন্ধ ঘোষনায় বড় কষ্ট পাচ্ছি। আরেক কর্মচারি কসিবুল হক বলেন ‘ আমি ১৯৯০ থেকে চাকরি করছি।  আমাদের রিযিকে হাত দিলো ‘ খুব বেদনা দায়ক।

চিনিকলের সাধারন সম্পাদক  আব্দুর রহমান বলেন‘ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমরা আকুল আবেদন করছি ‘ যেনো স্থানীয় অর্থনীতি আর মিলটির শ্রমিক –কর্মচারির কথা চিন্তা করে মিলটি চালুর ব্যবস্থা করেন। আমরাও চাই মিলটি আধুনিকায়ন করা হোক। চাকুরি হারালে এতো শ্রমিক কর্মচারি কোথায় যবে।

আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কুলকিনারা পাচ্ছিনা।’ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রোকনুজ্জামান বলেন‘ মিল চালুর সব প্রস্তুতি ছিলো ’ হঠাৎ করেই এমন ঘোষনা খুব কষ্টের। আমরা এখন কি করবো’। আমরা চাই মিলটি চালু করা হোক। না হলে ‘ পঞ্চগড়ের অর্থনীতিতে বড় রকম ধাক্কা লাগবে।

চলতি মৌসুমে পঞ্চগড় চিনিকলের আওতায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আখ রোপন করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার মেট্রিক টন। পঞ্চগড় চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়‘ এই আখ ঠাকুরগাঁও চিনিকলে যাবে।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় চিনিকলের মহা-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ইউসুফ আলী বলেন ‘ মিল বন্ধ বলা হয়নি। ‘ শিল্প সচিবের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে ‘ এবারে মাড়াই মৌসুমে আখ মাড়াই স্থগিত ঘোষনা করা হলো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ